হে যুবক ফিরে এসো রবের দিকে বইয়ের লেখক শাইখ খালিদ আর রশিদ এবং অনুবাদ করেছেন জুবায়ের রশীদ ৷ বইটি প্রকাশিত হয়েছে হাসানাহ পাবলিকেশন থেকে ৷ এটি ইসলামি আত্মউন্নয়নমূলক বই বিশেষ করে যুবক ভাইদের জন্য। বর্তমান যুবসমাজের মারাত্মক অবক্ষয় ঘটেছে। তাদের অন্তরে বাসা বেঁধেছে চরম গাফলত ও সীমাহীন আলস্য। আর সেই যুবকদের কিভাবে রবের দিকে ফিরিয়ে আনা যায় সেটিই আসলে বইটির বিষয়বস্তু।

বই বিবরণ
- বই বইয়ের নামঃ হে যুবক ফিরে এসো রবের দিকে ৷
- লেখকঃ শাইখ খালিদ আর রশিদ ৷
- অনুবাদকঃ জুবায়ের রশীদ ৷
- প্রকাশনীঃ হাসানাহ পাবলিকেশন ৷
- পেইজ সংখ্যাঃ ১৬০টি ৷
- দামঃ ১৬৮ টাকা(রকমারি হার্ডকপি)
- ক্যাটাগরিঃ ইসলামি আত্ম-উন্নয়ন বই ৷
হে যুবক ফিরে এসো রবের দিকে
মানব জীবনের ধারাবাহিক কয়েকটি স্তর রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো তারুণ্য। জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয় ব্যক্তির যৌবন ও তরুণ সময়ের সফলতা ও ব্যর্থতার আলোকে। ইহলৌকিক ক্ষণস্থায়ী জীবনের শুধু নয়; পারলৌকিক চিরস্থায়ী জীবনের সাফল্যও নির্ভর করে ব্যক্তির তারুণ্যের ওপর।
বৈষয়িক দৃষ্টিকোণের পাশাপাশি বলা চলে এর চেয়েও অধিক ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তরুণ ও যৌবনকালীন সময়কে অত্যধিক মূল্যায়িত করা হয়েছে। একে ঘিরে বর্ণিত হয়েছে প্রভূত ফজিলত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা যুবকদের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘হে নবী! আপনার নিকট আমি তাদের ইতিবৃত্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি, তারা ছিল কয়েকজন তরুণ। তারা তাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান এনেছিল। আমি তাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করে দিয়েছি।”
বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম যুবক ও তরুণদের দারুণ স্তুতি গেয়েছেন, তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এক হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাত শ্রেণির কথা উল্লেখ করেছেন, যাদেরকে কেয়ামতের ঘোরতর কঠিন দিনে আল্লাহ তায়ালা আরশের নিচে ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন যেদিন এ ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি শ্রেণি হলো, ওইসব যুবক যাদের তরুণকাল অতিবাহিত হয়েছে আল্লাহর ইবাদতে।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সাত শ্রেণির লোক যাদের আল্লাহ কেয়ামতের দিন আরশের নিচে ছায়া দেবেন; যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। (১) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (২) আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত যুবক (৩) এমন ব্যক্তি যে আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে এবং তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয় (৪) এমন ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে (৫) এমন দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরস্পরকে ভালোবাসে; (৬) এমন ব্যক্তি যাকে কোনো সম্ভ্রান্ত রূপসি রমণী নিজের দিকে আহ্বান করল কিন্তু সে বলল, আমি আল্লাহকে ভয় করি (৭) এমন ব্যক্তি যে সদকাহ করল এমনভাবে যে, তার বাম হাত জানে না তার ডান হাত কী করে।
নিঃসন্দেহে এ হাদিস যুবকদের মর্যাদা ও তারুণ্যের মাহাত্ম্যকে ফুটিয়ে তুলেছে। অধঃপতিত মুসলিম তরুণরা যদি এই একটি হাদিসকে নিয়ে গভীর চিন্তা করত, তাদের সামগ্রিক জীবনের গতিবিধি পরিবর্তন হয়ে যেত। সেই সঙ্গে তারুণ্যের উচ্ছল ও তুফান সময়কে ঘিরে বর্ণিত হয়েছে বহু সতর্কতা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হাশরের ময়দানে মানুষকে পাঁচটি বিষয়ের হিসাব দিতে হবে। এর পূর্বে এক কদমও কেউ অগ্রসর হতে পারবে না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যৌবনকাল কীভাবে ব্যয় করেছে। অপর এক হাদিসে নবীজি পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যায়ন করতে বলেছেন। তন্মধ্যে একটি হলো, বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে।
তারুণ্য ও যৌবনকালে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নৈকট্য ও অপার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবকদের ফজিলত বর্ণনার পাশাপাশি অধিক পরিমাণে সতর্কও করেছেন। কেননা, যৌবনকাল হলো রক্ত উষ্ণ করা সময়। যৌবন একটি প্রবল ঝড়ের নাম। এক অপ্রতিরোধ্য শক্তির নাম। কেউ যাকে রুখতে পারে না। দমাতে পারে না কোনো শক্তিই। হৃদয় ও মন যা চায় তাই করে। সে তখন শক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়। বিবেকের চেয়ে আবেগতাড়িত হয় অধিক। হিতাহিত জ্ঞান থাকে স্বল্প। ফলে অবাধ্যতা ও নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে যায় অতি সহজেই। অন্যায় ও পাপাচারে জড়িয়ে পড়ে সামান্যতেই। শয়তান ও প্রবৃত্তির ধোঁকায় পতিত হয়। বর্তমান সময়ে যা পরিলক্ষিত হচ্ছে চোখের সামনে।
চরম দুঃখজনক হলেও সত্য; আজ মুসলিম উম্মাহর তরুণ প্রজন্ম অতিক্রম করছে ধ্বংস ও পতনের এক নিদারুণ ক্রান্তিকাল। নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতনের চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে অপেক্ষা করছে কলঙ্কতিলক পরাজয়ের। নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার অতল গহ্বরে তারা নিমজ্জিত।
এ মর্মন্তুদ ও করুণ পরিস্থিতি থেকে মুসলিম উম্মাহকে মুক্ত হতে হবে। ফের ঘুরে দাঁড়াতে হবে লজ্জা ও কলঙ্কের কালি মুছে। মাথা উঁচু করে ফের দিতে হবে নারায়ে তাকবিরের ধ্বনি। নির্যাতিত-নিপীড়িত নারী-পুরুষদের উদ্ধার করতে হবে ঐ হিংস্র পশু-হায়েনার কবল থেকে। আর এর জন্য প্রয়োজন দ্বিগুণ প্রস্তুতি ও উপযুক্ত করণীয় নির্ধারণ।
প্রথম করণীয় হলো, মুসলিম তরুণ প্রজন্মকে জাগ্রত হতে হবে। নিজেদের আত্মমর্যাদাকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুনিয়ার উন্মত্ত নেশা, বস্তুবাদের লোভাতুর হাতছানি, পুঁজিবাদের অন্ধত্ব, অবাধ্যতা ও নাফরমানির জাল ছিন্ন করে ফিরে আসতে হবে ইসলামের শাশ্বত আলোয়। শক্তভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে আল্লাহর রজ্জুকে। নিজেদের জীবনে বাস্তবায়িত করতে হবে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ। গড়ে তুলতে হবে সুন্দর পাপমুক্ত জীবন। কেননা, পাপ মানুষের ঈমানি ও নৈতিক শক্তিকে নড়বড়ে করে দেয়। শত্রুর সাথে লড়াই করে জিতবার পূর্বেই ব্যক্তিগতভাবে তাকে পরাজিত করে দেয়। আজ তাই প্রথমে প্রয়োজন তরুণ প্রজন্মের ব্যক্তিত্ব গঠন।
“হে যুবক ফিরে এসো রবের দিকে” গ্রন্থটি মুসলিম যুব ও তরুণ প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দেবে তার কর্তব্যের কথা। উম্মাহর প্রতি তার অপরিসীম দায়বোধের কথা। স্মরণ করিয়ে দেবে হারানো ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা। এ গ্রন্থ মুসলিম তারুণ্যকে করে তুলবে অধিকতর সচেতন। তার হৃদয়ে ঈমানের সুবজ বৃক্ষ রোপণ করবে। তার চরিত্রকে করবে সুশোভিত। তার চেতনাকে করবে শানিত। চিন্তাকে করবে চৈত্রের রোদের মতো স্বচ্ছ ও প্রখর।
আরও পড়ুনঃ
হে যুবক ফিরে এসো রবের দিকে PDF বই | He Jubok Fire Aso Rober Dike Book
[ হার্ডকপি এবং পিডিএফ ]Join Telegram Channels

ফ্রি পিডিএফ বইয়ের সমাহার

"ঘরে বসে আয় করুণ"