খুশূ খুযূ PDF : বই খুশূ-খুযূ, লেখক ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম, অনুবাদক মাসউদুর রহমান এবং সমকালীন প্রকাশন ৷ বইটিতে সঠিক ভাবে সালাত আদায় এবং সালাতে মনোযোগী হওয়ার উপায় বর্ণনা করা হয়েছে ৷ আপনারা অনেকেই খুশূ খুযূ বইয়ের হার্ডকপি এবং পিডিএফ অনলাইনে খুজে থাকেন ৷ আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে ৷
খুশূ-খুযূ বই সংক্ষেপে পরিচিতি
- বইঃ খুশূ-খুযূ ৷
- লেখকঃ ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম ৷
- অনুবাদকঃ মাসউদুর রহমান ৷
- প্রকাশনীঃ সমকালীন প্রকাশন ৷
- ক্যাটাগরিঃ সালাত/নামায বিষয়ক বই ৷
নামাযের বিবরণ
নামায এর আরবী শব্দ সালাত। সালাত এর আভিধানিক অর্থ দোয়া করা, ক্ষমা চাওয়া, কারো গুণগান ও পবিত্রতা বর্ণনা করা, কারো দিকে মুখ করা, অগ্রসর হওয়া এবং নিকটবর্তী হওয়া। কুরআনের পরিভাষায় নামাযের অর্থ হল আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেয়া, তাঁর দিকে অগ্রসর হওয়া, তাঁর কাছেই চাওয়া এবং তাঁর নিকটবর্তী হওয়া। শরীয়তে উহার অর্থ এক বিশেষ পদ্ধতিতে আল্লাহর গুণগান করা, যাতে রুকু, সিজদা রয়েছে।
নামাযের গুরুত্ব
ইবাদত মানুষের স্বভাবে প্রোথিত এবং নামায তার উপযোগী ইবাদত। নামায বান্দার জন্য আল্লাহর দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার, বিশ্বাসের দলীল, পূণ্য কাজের মূল, সর্বোত্তম ইবাদত, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মাঝে পার্থক্য নির্ণয়কারী, মুক্তি ও নাজাতের পূর্বশর্ত এবং ঈমানের অতন্দ্র প্রহরী।
নামায ইসলামের পাঁচটি মৌলিক ভিত্তির দ্বিতীয় ভিত্তি। বান্দাহ ও আল্লাহর মাঝে সু-নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার অন্যতম সেতুবন্ধন। এটা পরিহার করলে কবীরা গুণাহ হবে। অস্বীকার করলে কাফির হবে। মুমিন ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্য হলো নামায ৷
নামায হচ্ছে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, “তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ, সে ভাবেই নামায আদায় কর”। হযরত ওমর (রা.) বলেন, “যার নামায ঠিক তার সবই ঠিক”। নামায সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে”। ইমাম ইবনে জারীর (র.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নামায পড়ে, অথচ তার নামায তাকে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারে না, সেই নামায দ্বারা সে আল্লাহর কাছ থেকে দূরত্ব ও অভিশাপ ছাড়া কিছুই অর্জন করতে পারে না”। কিন্তু আজ আমাদের মাঝে একজন নামাযী নামাযও পড়ছে অন্যদিকে অশ্লীল কাজেও জড়িত হচ্ছে। তাহলে আমরা বুঝতে পারি তার নামায যথাযথভাবে আদায় হচ্ছে না। আর না হওয়ার কারণ হল, বাহ্যিক পবিত্রতার সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ পবিত্রতাও দরকার।
সালাতে কুরআন: হোক অল্প, কিন্তু যথাযথ
সালাতে কুরআন তিলাওয়াতের উদ্দেশ্য দ্রুত কুরআন পাঠ করা নয়, বা একবারেই বেশি বেশি পাঠ করে কুরআন খতম করা নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো, আপনি সামর্থ্য অনুযায়ী অল্প অল্প করে পাঠ করুন। যেটুকু পাঠ করছেন, তার অর্থ ও মর্ম জেনে পাঠ করুন। এই পদ্ধতি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় আপনাকে বহুদূর নিয়ে যাবে। চেষ্টা করুন আজ থেকেই।
সালাতে কুরআন আপনি অল্পই পড়ুন, কিন্তু যথাযথ মাখরাজ (উচ্চারণ) এর দিকে গুরুত্ব দিন। সঠিক মাখরাজে পড়ার চেষ্টা আপনাকে সচেতন করে রাখবে, সালাতে ধরে রাখবে।
চেষ্টা করুন নতুন সূরা মুখস্ত করতে। একই সূরা দিয়ে পড়তে পড়তে নির্লিপ্ততা এসে পড়ে। সপ্তাহে একটি-দুটি নতুন সূরা বা আয়াত মুখস্ত করুন। হতে পারে বড় সূরার মাঝেই আপনার পছন্দের আয়াত। যেমন আয়াতুল কুরসি, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, সূরা আ-লি ইমরানের ২৭-২৮ নং আয়াত, সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত, সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত, শেষ দশ আয়াত, সূরা মুমিনুনের প্রথম ১০ আয়াত। অর্থও জেনে নিন। নতুন জিনিসের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। নতুন মুখস্ত করা সূরাগুলো আপনার আগ্রহ বাড়িয়ে দেবে সালাতে।
দ্রুত, না ধীর: বেছে নিন
যখন একাকী সালাত আদায় করছেন, তখন সালাতকে যথাসম্ভব দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করুন। তবে সালাতের ইমাম হিসেবে আবার তা করা ঠিক হবে না। আপনার মুসল্লিগণ যদি দীর্ঘ সময় নিয়ে সালাত আদায়ে আগ্রহী না থাকে, তবে বিশুদ্ধ মতানুযায়ী সালাতকে দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে সালাত দীর্ঘায়িত না করাই সুন্নাত। নিজের ইখলাসেও ঘাটতি দেখা দেবার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে একাকী নফল সালাত আদায়ের সময় আপনি ইচ্ছামাফিক সালাতকে দীর্ঘায়িত করতে পারেন। রাহমাহ’র সরোবরে ডুব দিয়ে প্রশান্তি মেখে নিতে পারেন যতখুশি, যতক্ষণ ইচ্ছে। আবার দিনের বেলার সালাতে এবং তার আগে পরে আপনার যে পরিমাণ ব্যস্ততা থাকে, দিনের শেষে সন্ধ্যা পরবর্তী সালাতগুলোয় কিন্তু তা থাকে না। এসময় আপনি ঘরে ফিরে ধীরেসুস্থে জামাআতের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। সুন্নাত
আদায় করে ফরযের অপেক্ষায় বসতে পারেন। মোট কথা আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতি ওয়াক্তের সালাত থেকে সর্বোচ্চ উপকারিতা হাসিলের চেষ্টা করা, নিজের সালাতের উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটানো।
নিশুতি রাতে একান্তে
গভীর রাতে সালাত যেন একাগ্রতার পেয়ালায় তৃপ্ত চুমুক। রাতের সুনসান নীরবতায় মহান রবের সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার যে স্বাদ, তার কি কোনো তুলনা হয়? থাকে না ব্যস্ততার কোনো পিছুটান। সকলের অলক্ষ্যে বলে ইখলাসের পারদও থাকে ঊর্ধ্বমুখী। আটপৌরে চিন্তার যাবতীয় বোঝামুক্ত হয়ে মনের রোখ থাকে কেবলই সান্নিধ্যের পানে, নৈকট্যের পিয়াসে। স্বয়ং রাব্বুল আলামীনের নিকট সবচেয়ে প্রিয় এ সময়ের সালাত। তাই তো এই মাহেন্দ্রক্ষণে মহান রব স্বয়ং পৃথিবী-সংলগ্ন প্রথম আসমানে অবতরণ করেন, নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের আরও নৈকট্যের অনুভূতি দেবার জন্য।
খুশূ খুযূ PDF এবং হার্ডকপি
Last updated: