সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ PDF, ছবি, ফজিলত

Rate this post

সূরা ফাতিহা কুরআন মজীদে সুবিন্যাস্ত প্রথম সূরা এবং নবী করীম (স)-এর প্রতি অবতীর্ণ সর্ব প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা। তাই এর গুরুত্ব বর্ণনাতীত। উপরন্তু মূল ত্রিশ পারা কুরআনে বিস্তারিতভাবে যা কিছু বিবৃত হইয়ছে, সূরা ফাতিহায় তার সার নির্যাস রয়েছে। এই সূরা পাঠ ব্যতীত কোন নামাযও সহীরূপে গ্রহণীয় হয় না বলে এই সূরা’র তাৎপর্য ও নিহিত ভাবধারাসমূহ বিস্তারিত ভাবে অনুধাবন করতে চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিমেরই কর্তব্য।

সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ PDF, ছবি, ফজিলত

‘ফাতিহা’ মানে ‘শুরু; সূচনা; ভূমিকা’। সূরা ফাতিহার তিনটি নাম আছে:

  • (১) ফাতিহাতুল কিতাব বা কুরআনের সূচনা। কেননা, কুরআন মাজীদ শুরুই হয়েছে এ-সূরা দিয়ে।
  • (২) উম্মুল কুরআন বা কুরআনের মূল। কেননা, গোটা কুরআনের মূল ম্যাসেজ এতে অল্পকথায় জায়গা পেয়েছে। আর
  • (৩) আস-সাবউল মাসানি বা বারবার-পাঠ-করার সাতটি আয়াত। কেননা, সূরা ফাতিহায় সাতটি আয়াত আছে-যেগুলো প্রতি নামাজে বারবার পড়তে হয়।

(দেখুন-তিরমিযি, ৩১২৪; বাগাবি, তাফসীর, ১/৭০; ইবনু কাসীর, তাফসীর, ১/১৪৫)

সূরা ফাতিহা শানে নুযুল

কুরআন কিন্তু গতানুগতিক কোনো বই নয়। কুরআন হলো জীবন-যাপনের প্রেসক্রিপশন। মানুষের একেক দরকারে নেমে এসেছে এর একেক সূরা। তো কোন দরকারে, কী প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে একেকটা আয়াত-তার দলিল-দস্তাবেজকেই বলে শানে নুযুল।

প্রায় সবগুলো বিশুদ্ধ তাফসীর ঘেঁটেও সুরা ফাতিহার এরকম কোনো শানে নুযুলের সন্ধান মেলেনি। বোঝাই যাচ্ছে-সূরা ফাতিহা বিশেষ কোনো উপলক্ষ্য নিয়ে নাযিল হয়নি। ওটা বরং মহান রবের পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিস্ময়কর উপহার। তবে হ্যাঁ, সুরা ফাতেহা যখন নাযিল হয়, তখনকার মক্কার চাল-চিত্র ঘাঁটাঘাঁটি করলে কিছু ব্যাপার বুঝতে পারা যায়। যেমন: তখন পবিত্র কা’বা-ঘরের আশপাশে বিস্তর মূর্তিপূজা হতো। সূরা ফাতিহায় আল্লাহ শুনিয়ে দিলেন তাওহীদের মর্মস্পর্শী ঘোষণা-আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদাত চলবে না। মূর্তি তো দূরে থাক, অন্য কোনো বিশ্বাস বা মতবাদেরও পূজা করা যাবে না।

আবার, ইসলামের ছায়াতলে আসায় তখনকার মুশরিকরা মুসলিমদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছিল। সূরা ফাতিহায় আল্লাহ শোনালেন সান্ত্বনার বাণী-একটু সবুর করো। বিচার-দিনে যার যা পাওনা, সব মিটিয়ে দেওয়া হবে। আর শেষমেশ সরল পথ চাইতে বলার মাধ্যমে সমগ্র মুসলিম জাতিকে তিনি গেঁথে দিলেন একই সুতোয়। আমাদের তাই একটাই পরিচয়-প্রত্যেকে সরল পথের অনুসারী, ঐক্যবদ্ধ এক জাতি।

(দেখুন-সূরা নাহল, ১৬:৮৯; বুখারি, ৫০০৬; মুসলিম, ৮০৬, ১৭১৫, ২৫৮৬)

সুরা ফাতিহার ফজিলত

হযরত আবু ওবায়েদা (রাঃ) হাসান বছরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী কারীম (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সূরায়ে ফাতেহা পড়ল সে যেন তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কোরআন সবগুলোই পড়ল।

হযরত ছায়লাবী (রাঃ) হযরত শায়বী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি তার খেদমতে আসার পর ব্যথা বেদনার কথা বললেন। তাঁকে শায়বী (রাঃ) বললেন তুমি আছাদুল কুরআন পড়ে ব্যথার স্থানে ফুঁক দাও। ইনশা আল্লাহ তোমার ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। লোকটি জিজ্ঞাসা করল যে, কি ফাতেহাতুল কিতাব? তিনি বলেন অর্থাৎ সূরায়ে ফাতেহা!

হাদিসে বর্ণিত আছে যে, হযরত জিব্রাইল (আঃ) হুজুর (সাঃ) এর নিকট বসা অবস্থায় ছিলেন হঠাৎ আসমানের দিক থেকে ভাঙ্গার একটি বড় ধরনের আওয়াজ শুনা গেল। হযরত জিব্রইল (আঃ) বললেন এখন একজন ফেরেস্তা অবতরণ করছে যা ইতিপূর্বে আর কখনো অবতরণ করে নাই। ফেরেস্তা এসে হুজুর (সাঃ) কে সালাম করে আবেদন করেন যে, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি বরকতময় হন। আপনাকে এমন জিনিষ দেওয়া হয়েছে, যা ইতিপূর্বে আর কোন নবীকে দেওয়া হয় নাই। (১) সূরায়ে ফাতেহা (২) সূরায়ে বাক্বারার শেষ দুই আয়াত। এই দুই সূরার মধ্যে উল্লেখিত যে কোন অক্ষরকেই আপনি পড়েন আপনাকে ইহার প্রতিদান দেওয়া হবে।

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। হুজুর (সাঃ) বলেন, যখন কোন ব্যক্তি তাঁর হাতকে বিছানার উপর রাখবে অর্থাৎ শোয়ার জন্য যাবে সুরায়ে ফাতেহা ও ইখলাছ পড়ে নিজের শরীরে ফুঁক দিবে। সে সমস্ত বিপদাপদ থেকে হেফাজত থাকবে। তবে মৃত্যু আসলে তা থেকে কোন কিছু বাঁচাতে পারবেনা।

আরও পড়ুনঃ

  1. বাংলা কুরআন পিডিএফ ৷
  2. তাফসীরুল কোরআন ৷
  3. সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণসহ পিডিএফ ৷
  4. সূরা ইয়াসিন বাংলা উচ্চারণসহ পিডিএফ ৷

সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ ছবি এবং PDF

সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ ছবি