“দ্য প্রিন্সেস অফ উইঘুর” বইটির লেখক সায়ীদ উসমান ৷ বইটি প্রকাশিত হয়েছে রাহনুমা প্রকাশনী দ্বারা ৷ বইটি নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের মর্মন্তুদ জীবনাখ্যান নিয়ে লেখা ৷ বইটি পড়তে পারেন ৷ অনেকে বইটির হার্ডকপি এবং পিডিএফ খুজে থাকেন ৷ (The Pricess Of Oyghur Bangla Book)

বই বিবরণ
- বইয়ের নামঃ দ্য প্রিন্সেস অফ উইঘুর ৷
- লেখকঃ সায়ীদ উসমান ৷
- প্রকাশনীঃ রাহনুমা প্রকাশনী ৷
- দামঃ ১৫০ টাকা(হার্ডকপি রকমারিতে)
- পেইজ সংখ্যাঃ ১২৮ পেইজ ৷
- ক্যাটাগরিঃ ইসলামি সাহিত্য: উপন্যাস ৷
দ্য প্রিন্সেস অফ উইঘুর (একটু পড়ুন)
মধ্যরাত! ঘুমন্ত পিলির উপর ছেয়ে আছে গাঢ় নৈঃশব্দ। নিস্তব্ধ নিস্তরঙ্গ সবুজ গ্রামের উপর ঝুলে আছে অন্ধকারের কালো পর্দা। আকাশ যেন কালো কুয়াশায় মুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিটি বাড়িঘর। শীতের রাতে পিলির চোখে চোখে জেঁকে বসেছে ঘুম।
হঠাৎ এই মধ্যরাতে কালো রঙের দুটো প্রাইভেটকার ঢুকল গ্রামের ভেতর, হেড লাইট নিভিয়ে, কোনো শব্দ না করে। এগিয়ে গেল গ্রামের রাস্তা ধরে। পিলপিল করে, কচ্ছপ গতিতে ‘ইসলাম হাউজের’ সামনে এসে থামল। ইসলাম হাউজ ডক্টর আব্দুল্লাহ হাইয়ানের বাড়ি। বাড়ির চারদিকে উঁচু সীমানাপ্রাচীর। ভেতরে একতলা সেমিপাকা বিল্ডিং।
কালো রঙের প্রাইভেটকার দুটো থেকে নেমে এল চারজন মানুষ। কালো কাপড়ে ঢাকা মুখ। শুধু চোখ দুটো শিকারী বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে। হাতে অস্ত্র। পিঠে ঝুলছে ব্যাকপ্যাক। পা টিপে টিপে ‘ইসলাম হাউজের’ গেইটে এসে দাঁড়াল ওরা। গেইটে হাই-সিকিউরিটি লক লাগানো। ব্যাকপ্যাক থেকে কী সব জিনিষপত্র বের করল একজন। হাই-সিকিউরিটি লকের সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ কারিগরি ফলাতেই খুঁটকরে একটা শব্দ হল। এরপর টান দিতেই খুলে গেল হাই-সিকিউরিটি লক।
পা টিপে টিপে গেইট পেরোলো আগন্তুকরা। ডক্টর আব্দুল্লাহ হাইয়ানের রুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। আস্তে আস্তে নক করল। একবার। দুবার। তিনবার। কোন সাড়া নেই। আবারও নক হল। ঠক ঠক ঠক। একটু জোরে। দুবার নক হতেই ডক্টরের ঘুম ভাঙলো। নড়লেন না তিনি। শুয়ে থাকলেন ঘুমের ভান করে। পাশে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রীর দিকে তাকালেন একবার। এই মধ্যরাতে কে দরজা নক করতে পারে বোঝার চেষ্টা করলেন। কাইফি? নাহ! ও হলে নক করার আগে বাবা বলে ডাক দিতো। তাহলে কে এল দরজায়? ভাবতে ভাবতেই উঠে বসলেন ডক্টর। চলে এলেন পাশের জানালায়। কে নক করছে দেখার চেষ্টা করলেন। অন্ধকারে কিছুই ঠাহর করতে পারলেন না। কি করবেন-দরজা খুলবেন কি খুলবেন না-ভাবতে ভাবতে স্ত্রীকে জাগালেন। ততক্ষণে নক করার গতি আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এখন হাতুড়িপেটা চলছে দরজায়।
উঁচু গলায় হাঁক ছাড়লেন ডক্টর, ‘কে এত রাতে, কি চাও?’
কোনো উত্তর এল না। শুধু নক করায় বিরতি পড়ল কিছুক্ষণের জন্য। এরপর আর নক করার দিকে গেল না আগন্তুকরা। একের পর এক লাথি চালাতে লাগল দরজায়। দড়াম দড়াম শব্দে রাতের নিস্তব্দতা ভেঙে খানখান হল।
পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিল কাইফি। ওর ঘুম ভেঙে গেল। ওর রুম থেকে ডক্টরের রুমের সামনের অংশটা দেখা যায়। রুমের জানালা দিয়ে টর্চ টিপে ধরল ও। দেখল, চারজনের একটা গ্রুপ। কালো কাপড়ে ঢাকা সমগ্র শরীর। শুধু চোখ দুটো চিতার চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে। হাতের ভারি অস্ত্র নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিচ্ছে।
ভয়ের একটা স্রোত বয়ে গেল কাইফির শরীরে। সাথে সাথে মোবাইল হাতে নিল ও। পাড়াপড়শিদের নাম্বারে কল দিতে লাগল। বলাই আছে, কারো ঘরে ‘কিডনেপার গ্যাং’ হানা দিলে টের পাওয়ার সাথে সাথে পাড়াপড়শিদের জানাতে হবে এবং সবাই মিলে কিডনেপার গ্যাংকে রুখার চেষ্টা করবে।
জিনজিয়াং-এ কিডনেপার গ্যাং-এর তৎপরতা পুরোনো বিষয়। মুসলিম ছাত্র, ছাত্রনেতা, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী-এরাই কিডনেপার গ্যাং-এর টার্গেট। সম্প্রতি গুম, অপহরণ বেশ বেড়ে গেছে। আজ এই এলাকায় কেউ গুম হচ্ছে তো কাল ওই এলাকায়। পুলিশে অভিযোগ করে লাভ তো হয়ই না বরং আপদ বাড়ে। ওরা এসে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মুসলিমদের ধরে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যায় এবং দু-তিন দিন নানা হেনস্থা করে তারপরই ছাড়ে।
একবার কেউ গুম হয়ে গেলে সে আর ফিরে আসে না। চিরতরেই যেন হারিয়ে যায়। যে কারণে উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর মাঝে অলিখিত চুক্তি আছে, কেউ কিডনেপার গ্যাং-এর কবলে পড়লে পাড়াপড়শিকে জানাবে। পাড়াপড়শিরা সবাই মিলে কিডনেপার গ্যাংকে প্রতিরোধ করবে।
পাড়াপড়শিরা লাঠিসোটা নিয়ে হাজির হওয়ার আগেই ডক্টরের দরজা ভেঙে ফেলল কিডনেপার গ্যাং। বাবাকে বাঁচাতে বেরিয়ে এল কাইফি, ছাড়িয়ে নিতে চাইল জোর করে। পারল না। শুরু হল ধস্তাধস্তি। কিডনেপার গ্যাং-এর একজন কি একটা ওষুধ স্প্রে করল মিসেস হাইয়ান ও কাইফির নাকেমুখে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল ওরা। ডক্টরের নাকমুখ চেপেধরে বাড়ির বাইরে হাঁকিয়ে নিয়ে গেল কিডনেপার গ্যাং। পাড়াপড়শিরা প্রতিরোধ করতে এলেও সুবিধা করতে পারল না। ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে গাড়িতে চড়ল আগান্তকেরা। দ্রুত গাড়ি হাঁকিয়ে পালিয়ে গেল এলাকা ছেড়ে। ওদের গতিরোধ বা প্রতিরোধের কোনো সুযোগই পাওয়া গেল না।
বাড়ির ভেতর ঢুকল পাড়াপড়শিরা। অজ্ঞান কাইফি আর মিসেস হাইয়ানের মাথায় পানি দেওয়া হল। ওদের জ্ঞান ফিরতে ফিরতে ভোর হল। এসময় পড়শিদের একজন একটা মোবাইল পড়ে থাকতে দেখল ডক্টরের রুমে। দেখেই দৌড়ে গেল ভেতরে। হাতে নিল মোবাইলটা। বুঝে ফেলল, কিডনেপার গ্যাং-এর কারো হবে। ধস্তাধস্তির সময় হয়তো পড়ে গিয়েছিল।
দ্য প্রিন্সেস অফ উইঘুর PDF বই | The Pricess Of Oyghur Book
[ বইটির হার্ডকপি এবং পিডিএফ ]Join Telegram Channels

ফ্রি পিডিএফ বইয়ের সমাহার

"ঘরে বসে আয় করুণ"